নিজস্ব প্রতিনিধি: সোনারপুর, ২৫শে ফেব্রুয়ারি — তথ্যপ্রযুক্তি, টেলিযোগাযোগ এবং সৌর শক্তির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার দিকে তাকিয়েই হার্ডওয়্যার নীতি গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। সোনারপুরে হার্ডওয়্যার পার্ক গঠনের উদ্যোগও সেই নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই শুক্রবার সোনারপুরে ওয়েবেল ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রি পার্কের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এগারো একর জমির ওপর গড়ে উঠছে পার্কটি। যেখানে তিনটি সংস্থা আপাতত জমি নিয়েছে। সম্পূর্ণ গড়ে উঠলে সেখানে জায়গা পাবে অন্তত ২০টি কোম্পানি। আনুমানিক বিনিয়োগ হবে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। প্রত্যক্ষভাবে কাজ পাবেন অন্তত দেড় হাজার মানুষ। পরোক্ষভাবে কাজের সঙ্গে যুক্ত হবেন অন্তত আরো হাজার দশেক মানুষ।
রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী দেবেশ দাস জানান, গত পাঁচ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রগতি ঘটেছে এরাজ্যের। ২০০৬ সালে যেখানে এই শিল্পে কাজ করতেন প্রায় ৩২ হাজার মানুষ ২০১০ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৫ হাজার। রাজ্যের অনুমান আগামী এক বছরের মধ্যে সেই সংখ্যা ২ লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে। ২০০৬ সালে যেখানে সফটওয়্যার রপ্তানির মূল্য ছিলো ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, ২০১০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তিনি জানান, সৌর বিদ্যুতের সেল মডিউল এবং সার্কিট তৈরির ক্ষেত্রেও অন্যতম অগ্রগণ্য এরাজ্য। ভারতে সোলার সেল এবং মডিউল তৈরি করে ৩০টি কোম্পানি, এরমধ্যে এরাজ্যেই রয়েছে ৮টি। সারা দেশে সোলার সার্কিট তৈরি করে ৮০টি কোম্পানি। এর মধ্যে ৩১টি এরাজ্যের। মুখ্যমন্ত্রী জানান, যেহেতু আগামীদিনে সৌর শক্তির ব্যবহার বাড়াতেই হবে, এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা এবং তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বিকাশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। তাই হার্ডওয়্যারের ক্ষেত্রেও এরাজ্যের সম্ভাবনা উজ্জ্বল।
রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরের প্রধান সচিব বাসুদেব ব্যানার্জি বলেন, সারা দেশেই হার্ডওয়্যার উৎপাদনের ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে। অথচ যে হারে বাড়ছে টেলিযোগাযোগ, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট পরিষেবা কম্পিউটারের ব্যবহার তাতে হার্ডওয়্যার উৎপাদনের পরিকল্পনার প্রয়োজন। বর্তমানে হার্ডওয়্যার বাজারের বৃদ্ধির বার্ষিক হার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ। দেবেশ দাস জানান, যে তিনটি সংস্থাকে এদিন জমি দেওয়া হলো, তাছাড়াও তাইওয়ানের কয়েকটি সংস্থার সঙ্গেও আলোচনা চলছে। যে জমিটিতে গড়ে উঠছে ইলেকট্রনিক্স পার্কটি, সেটি ছিলো একটি বন্ধ ইটভাটার জমি।
এদিন অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সোনারপুরের বিধায়ক শ্যামল নস্কর, ওয়েবেলের চেয়ারম্যান এন আর ব্যানার্জি, ওয়েবেলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তমাল দাশগুপ্ত, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক নারয়ণস্বরূপ নিগম প্রমুখ।
No comments:
Post a Comment