Friday, April 15, 2011

প্রসঙ্গ জঞ্জাল সাফাই


আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৩ পৌষ ১৪১৭ শনিবার ৮ জানুয়ারি ২০১১
পরিষেবায় গাফিলতি
জমছে জঞ্জাল
দেবাশিস দাস
বাঁশি বাজতে বাজতে বিকেল। তত ক্ষণে বাড়ির আবর্জনা রাস্তায় বা আশপাশের ফাঁকা জায়গায়। রাজপুর-সোনারপুর পুর-এলাকার এটিই নিত্য দিনের ঘটনা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আবর্জনা সংগ্রহের গাড়ি অধিকাংশ দিনই নির্ধারিত সময়ে আসে না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি দিনের ময়লা জমিয়ে রাখাও সম্ভব নয়। তাই আশপাশে ময়লা ফেলতে তাঁরা বাধ্য হন। যদিও পুর-কর্তৃপক্ষ বিষয়টির দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
এলাকার বাসিন্দা ফুলমণি মৈত্র বলেন, “ময়লা সংগ্রহের গাড়ি আসার কোনও সময় ঠিক থাকে না। কোনও কোনও দিন আসেও না। ফলে জমা আবর্জনা বাড়িতেই রেখে দিতে হয়। অনেকের পক্ষে বাড়িতে জঞ্জাল রাখা সম্ভব নয়। তাই বাসিন্দাদের একাংশ আশেপাশে ময়লা ফেলেন।তবে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা আটকাতে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা বোর্ড টাঙিয়ে যেখানে-সেখানে আবর্জনা ফেলা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধবলে প্রচারও চালাচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনা জমে থাকছে।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান এবং ১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সিপিআই-এর তড়িৎ চক্রবর্তী বলেন, “বর্তমান পুরবোর্ড নির্বাচনের আগে বাসিন্দাদের বিনামূল্যে আবর্জনা অপসারণের পরিষেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু আজও বাসিন্দাদের অর্থ দিতে হয়। অথচ তাঁরা পরিষেবা ঠিকমতো পান না।পুরসভার প্রান্তিক ওয়ার্ডগুলির বাসিন্দারা জঞ্জাল অপসারণ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধগড়িয়া, মহাময়াতলা, বোড়াল, রানিয়ার মতো এলাকাগুলিতে প্রতি দিন জঞ্জাল সংগ্রহের প্রক্রিয়া মাঝেমধ্যেই ব্যাহত হয় বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজপুর-সোনারপুরের নতুন পুরবোর্ড আবর্জনা সংগ্রহের পুরনো পদ্ধতিই বজায় রেখেছে। পুরসভা সূত্রে খবর, আবর্জনা অপসারণের ক্ষেত্রে কর্মীর অভাব রয়েছে।
গত বোর্ডের সময় যে সংস্থাগুলি এই জঞ্জাল অপসারণের দায়িত্বে ছিল তারাই এখনও এই কাজের জন্য পুরসভার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ রয়েছে। এলাকায় লোকবসতি আগের চেয়ে অনেক বেড়ছে। ফলে কাজের চাপও বেড়েছে। কিন্তু বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ বাড়েনি। ফলে কর্মী সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হয়নি। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, জঞ্জাল সংগ্রহ প্রক্রিয়ার এই পরিকাঠামোগত সমস্যা পুরনো বোর্ডের সময় থেকেই চলছে।
সমস্যার কথা স্বীকার করে পুরসভার নিকাশি ইনস্পেক্টর প্রশান্ত সিংহরায় বলেন, “জঞ্জাল অপসারণের কাজটি করা হয় ওয়ার্ডভিত্তিক কয়েকটি সংস্থার মাধ্যমে। এই সব সংস্থার সঙ্গে স্থানীয় যুবকরাই যুক্ত। এদের কেউ কাজে আসতে দেরি করলে বা না এলে জঞ্জাল সংগ্রহের প্রক্রিয়াটি অবশ্যই ব্যাহত হয়।
বর্তমান পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) তৃণমূলের পল্লবকুমার দাসের কথায়: এই কাজের সঙ্গে যে সংস্থাগুলি যুক্ত আছে তাদের সঙ্গে খুব শীঘ্রই আলোচনায় বসব।পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের ইন্দুভূষণ ভট্টাচার্য বলেন, “আবর্জনা সংগ্রহের প্রক্রিয়ার সঙ্গে পুরসভা সরাসরি যুক্ত নয়। ওয়ার্ডভিত্তিক কয়েকটি সংস্থার মাধ্যমে এই কাজ করা হয়। এই সংস্থাগুলিকে পুরনো বোর্ডই ঠিক করেছিল। কাজের গাফিলতির জন্য এর মধ্যেই আমরা বেশ কয়েকটি সংস্থাকে বাতিল করে দিয়েছি। 

No comments:

Post a Comment